সোমবার ২৪ নভেম্বর ২০২৫ - ১৬:৪১
ইসরাইলের লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডই তার পতন ত্বরান্বিত করবে

ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান মোহসেন রেজায়ী সতর্ক করে বলেছেন, প্রতিরোধ ফ্রন্টের কমান্ডারদের হত্যা করে ইসরাইল মনে করছে সে অঞ্চলের প্রতিরোধ শক্তিকে দুর্বল করতে পারবে; অথচ এসব হত্যাকাণ্ডই শেষ পর্যন্ত ইসরাইলের পতনকে দ্রুততর করবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: দেশটির কেরমানে প্রদেশের নাম-অজানা শহীদদের জানাজার বক্তব্যে এসব কথা কথা বলেন ইরানের এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের এই সদস্য।

রেজায়ী বলেন, ইসরাইল ভুলভাবে ধারণা করছে যে লক্ষ্যভিত্তিক হত্যার মাধ্যমে আঞ্চলিক প্রতিরোধ গোষ্ঠীর নেতৃত্ব ভেঙে ফেলা সম্ভব। “প্রতিটি শহীদ কমান্ডার ইসরাইলকে তার সমাপ্তির আরও এক ধাপ কাছে নিয়ে যায়,” মন্তব্য করে তিনি জানান—এই নেতারা কোনো সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন, বরং জনগণের হৃদয় ও ইচ্ছা থেকে উঠে আসা ব্যক্তিত্ব।

তিনি উল্লেখ করেন, রবিবার দক্ষিণ বৈরুতের দাহিয়ে এলাকায় আবাসিক ভবনে ইসরাইলের “বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ” আক্রমণে হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার হায়থাম আলী তাবাতাবায়ীসহ অন্তত পাঁচজন প্রতিরোধ যোদ্ধা শহীদ হন। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ২৮ জন আহত হন।

রেজায়ী বলেন, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাতের পরেও লেবাননের প্রতিরোধ আজ আরও শক্তিশালী। ইরান কখনও অন্য জাতিকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় না জানিয়ে তিনি বলেন, তবে লেবাননের প্রতিরোধ শক্তির হয়তো তাদের ধৈর্য ও সংযমের কৌশল পুনর্মূল্যায়নের সময় এসেছে, কারণ ইসরাইল এই সুযোগকে অপব্যবহার করছে।

ইসরাইলের আরোপিত সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইরানের জনগণের দৃঢ়তা ও প্রতিরোধ দেশটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন দখলদারি পরিস্থিতির মতো বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেছে। “জনগণের এই ত্যাগ ও স্থিতিশীলতা না থাকলে ইরান ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতো।”

গত ১৩ জুন, তেহরান–ওয়াশিংটন পরমাণু আলোচনার মাঝপথে ইসরাইল “নির্লজ্জ ও অপ্ররোচিত” আগ্রাসন চালায়। এ হামলার পর শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধেই সামরিক কমান্ডার, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিকসহ অন্তত ১,০৬৪ জন ইরানি শহীদ হন।

যুক্তরাষ্ট্রও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা বর্ষণ করে যুদ্ধে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়।

এর পাল্টা জবাব হিসেবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী দখলীকৃত ভূখণ্ডের বিভিন্ন কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু এবং কাতারের আল-উদেইদ এয়ারবেসে (পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি) নির্ভুল হামলা পরিচালনা করে।

২৪ জুন ইরান ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র—উভয়ের বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধমূলক অভিযানের মাধ্যমে এই আগ্রাসনের অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha